ডাল শরীরের জন্য খুবই উপকারী । বিশেষ করে যারা নিরামিষ খাবার খেয়ে থাকেন , তাঁদের জন্য মুগ ডাল খুব উপকারী একটি খাবার । এটি সাধারণত ডাল হিসেবে দৈনন্দিন খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় , যার জৈবিক কার্যকলাপ – সহ প্রচুর পুষ্টি রয়েছে । সাধারন ডাল – ভাত খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই খোসা – সহ মুগ ডাল ভিজিয়ে বা রান্না করেও খেতে পছন্দ করে । এই ডাল দিয়ে মুড়ি ঘণ্ট , ভুনার মতো হরেক পদ রান্না করা যায় । বাঙালির খাদ্য তালিকায় মুগ ডাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আমিষ বা নিরামিষ দুই ভাবেই খাওয়া হয় এই সুস্বাদু ডাল । এই গরমে মুগ ডাল খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতাও কিন্তু কম নয় ।

ডাল খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায় । শুধু তাই নয় , বাঙালির খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের ডাল রয়েছে যেমন – মসুর ডাল , মুগ ডাল মাসকলাই ডাল , ছোলার ডাল , অড়হর ডাল ইত্যাদি । আর এর মধ্যে অন্যতম হল মুগ ডাল । এই ডালের গন্ধ ও স্বাদ বেশ আকর্ষণীয় হয় । এই ডাল যেমন খেতে , তেমনই পুষ্টিগুণে ভরপুর । এই ডালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন , পটাশিয়াম , ম্যাঙ্গানিজ , ফোলেট , ফাইবার এবং প্রোটিন – সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে । মুগ ডালে প্রচুর প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে বলে বাড়টি ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর এটি । এছাড়া , মুগ ডাল রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে । তাই মুগ ডাল শরীরের জন্য খুবই উপকারী ।

তবে , এমন অনেকে আছেন যাঁদের কাছে মুগ ডাল বিষের সমান । তাঁদের মুগ ডাল একদম খাওয়া উচিত নয় । এতে হিতে বিপরীত হতে পারে । কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মুগ ডাল না খাওয়াই ভালো । মুগ ডাল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী হলেও কিছু মানুষের কাছে এটি বিপজ্জনক হতে পারে । চলুন জেনেনি মুগ ডালের বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ।
পেটের সমস্যা ঃ মুগ ডাল রান্না করার সময় ঠিক মতো রান্না করা হলে ঘুম ঘুম ভাব , ঝিমুনির কারণ হতে পারে । এছাড়া পেটের রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের এই ডাল না খাওয়াই ভালো । এছাড়া এতে অতিরিক্ত ফাইবার থাকায় এই ডাল খেলে পেটের গণ্ডগোল হতে পারে । ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন এড়াতে অন্তঃসত্ত্বাদের এই ডাল এড়িয়ে চলা ভালো ।

ইউরিক অ্যাসিড ঃ যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি , তাঁদের জন্য মুগ ডাল বিষের মতো কাজ করে । আসলে এই ডালে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায় যে কারণে শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায় । আর রক্তে প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকলে তা ইউরিক অ্যাসিডের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে । ফলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে শরীরে বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে ব্যথা , যন্ত্রণা , ফুলে থাকা এই সব সমস্যা দেখা দেয় ।
লো ব্লাড সুগার ঃ লো ব্লাড সুগারের রোগীদের জন্য মুগ ডাল খাওয়া ক্ষতিকর । মুগ ডালে এমন অনেক উপাদান পাওয়া যায় । যা শরীরে থাকা ব্লাড সুগারকে আরও কমিয়ে দেয় । ফলে লো ব্লাড সুগারের রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যায় ।
কিডনিতে পাথর ঃ কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের মুগ ডাল এড়িয়ে চলা উচিত । মুগ ডালে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট এবং প্রোটিন পয়াওয়া যায় । যে কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায় । কিদনিতে সাধারনত দু ধরনের পাথর জমতে দেখা যায় । প্রথমটি হল – কম জল খাওয়ার কারনে , অপরটি – ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে ।

অ্যালার্জি ঃ অতিরিক্ত মুগ ডাল খাওয়ার ফলে আলারজির ভাব দেখা দিতে পারে । অ্যালার্জির উপসর্গ হিসেবে ফুসকুড়ি , চুলকানি , চোখ দিয়ে জল পড়া , জিভ ফুলে যাওয়া , শ্বাসকষ্ট , গলায় চুলকানি ইত্যাদি হতে পারে ।
যৌন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ একটানা দীর্ঘদিন ধরে অধিক পরিমানে মুগ ডাল খাওয়ার ফলে বীর্য শক্তি কমতে পারে এবং অন্যান্য যৌন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে ।