health tips : শরীর ভেতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতে যে সমস্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন ।

এত গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত । কারণ , প্রচণ্ড গরমে অতিরিক্ত মাত্রা ঘাম বের হওয়ায় জল শূন্যতা ঝুঁকিতে পরে শরীর । এতে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় । ফলে শরীরে অস্বস্তি , ক্লান্তির মতো একাধিক উপসর্গ দেখা দেয় । এ অবস্থায় শরীর সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমানে জল খেতে হবে । এছাড়া , গরমে গরমে শরীরকে স্বস্তি দিতে কিছু আরামদায়ক খাবার খেতে হবে । যা শরীর ভেতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং এর পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতে পারে ।

এ সময় অতিরিক্ত মসলাদার খাবার বাদ দিয়ে খেতে হবে এমন সব খাবার যার ভেতরে জল বেশি রয়েছে । এই সময় ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত । কারণ গরমে পেটের সমস্যা ঝুঁকি বহুগুন বেড়ে যায় । গরমে শরীরকে তাপ থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি শরীরকে হাইড্রেট রাখা প্রয়োজন যাতে শরীরে জলের ঘাটতি না হয় । এই ঋতুতে এমন সব খাবার খাওয়া উচিত , যা শরীরকে ঠাণ্ডা করে এবং হিট স্ট্রোক বা রোদ স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে । গরম থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হল খাদ্যতালিকায় সতেজ এবং হাইড্রেটিং খাবার যোগ করা । রসালো ফল থেকে শুরু করে খাস্তা স্যালাড পর্যন্ত , গরম জুড়ে ঠাণ্ডা এবং উজ্জীবিত রাখতে সাহায্য করে ।

এই সময় কৃত্রিম রঙ ও স্বাদযুক্ত কোনো জুস বা পানীয় খাবেন না । এতে করে সাময়িক তৃষ্ণা মিটলেও ডেকে আনবে নানা ক্ষতি । তাই গরমের তীব্র তাপদাহে , শরীরকে এমন খাবার দিয়ে পুষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি যা কেবল শরীর ঠাণ্ডা রাখে না বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং জলীয়তা প্রদাহ করে । প্রকৃতি বছরের উষ্ণতম মাসগুলিতে তাপকে পরাজিত করতে এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করার জন্য প্রচুর বিকল্প প্রদান করে । যা কেবল স্বাদ কুঁড়িয়ে মুগ্ধ করবে না বরং আপনাকে সতেজ এবং পুনরুজ্জীবিত বোধ করবে ।

চলো জেনে নিন গরমের সময় কোন খাবারগুলো শরীর ভেতর থেকে ঠাণ্ডা ও সুস্থ রাখে —

ডাবের জল ঃ ডাবের জলে রয়েছে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইটস । সেই সঙ্গে এটি এনার্জি বাড়াতেও সাহায্য করে । ডাবের জলে থাকা উপকারী বিভিন্ন খনিজ উপাদান শরীরে জলের চাহিদা পূরণ করে এবং হজমের সাহায্য করে । ডাবের জল প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি এবং সতেজ , যা এটিকে চিনিযুক্ত পানীয়ের একটি সুস্বাদু বিকল্প করে তোলে । তাই গরমে স্বস্তি পেতে নিয়মিত ডাবের জল খেতে পারেন ।

দই ঃ দই হল একটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার যা হজমশক্তি উন্নত করতে এবং পেটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে । গরমকালে খুবই উপকারী খাবার হচ্ছে টক দই । কারণ এতে এমন কিছু উপাদান থাকে , যা শরীরকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । দইয়ের সঙ্গে জিরার গুড়ো ,পুদিনা পাতা ও লবন মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন স্বাস্থ্যকর পানীয় । এটি গরমে আরাম দেবে ।

আখের রস ঃ আখের রস শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খুব কার্যকারী । আখের রসের সঙ্গে বিট নুন , পুদিনা পাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এর স্বাদ বাড়ে এবং পুষ্টিগুণ বাড়ে ।

তরমুজ ঃ এই গরমে অসাধারণ একটি ফল হল তরমুজ , এটি শরীর ঠাণ্ডা করতে সাহায্য করে । এতে আছে ভিটামিন ও খনিজ লবন , যা এই গরমে শরীরের জন্য দরকার । প্রায় ৯২% জলে সমৃদ্ধ তরমুজ ত্বককেআর্দ্র রাখার জন্য একটি শক্তিশালী উপাদান । তরমুজ উচ্চ লাইকোপেন সমৃদ্ধ , ক্যান্সারের কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে । এতে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে । যারা ওজন কমাতে চান , তারা খাদ্যতালিকায় তরমুজ রাখতে পারেন ।

পুদিনা ঃ এই বহুমুখী ভেষজটি একটি পাকৃতিক শীতলকারী । এটি শরীর ভেতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতে কাজ করে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার সরবত অতুলনীয় । পুদিনার চাটনি , পুদিনার সরবত ইত্যাদি খেতে পারেন । স্যালাডে সঙ্গেও রাখতে পারেন । পুদিনা পাতা গুড়ো করে ঠাণ্ডা জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন । আবার শুধু জলে কয়েকটা পুদিনা পাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে ডিটক্স ওয়াটার বানিয়ে খেতে পারেন । এই পানীয়টি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে । যারা চা খেতে পছন্দ করেন , তারা পুদিনার চা খেতে পারেন ।

লাউ ঃ এই সময়ে লাউ সহজলভ্য । লাউ ওজন কমাতে এবং হজমে সাহায্য করে । লাউ সেদ্ধ করে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন । এতে করে রায়তার মতো খেতে পারেন । এছাড়া , খেতে পারেন লাউয়ের ডাল এবং লাউয়ের স্যুপ ।

শসা ; যে কোন মৌসুমি শসা খাওয়া স্বাস্থ্যকর । বিশেষ করে গরমকালের শসার স্যালাড খাওয়া উচিত । এতে শরীর ঠাণ্ডা থাকে ,ডিহাইড্রেশন হয় না এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কার্যকর । শসা পটাসিয়ামের একটি ভালো উৎস , যা ঘামের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইট পূরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । শসা ৯৫% জলে সমৃদ্ধ , যা হালকা এবং শীতল খাবারের জন্য এটিকে একটি দুর্দান্ত পছন্দ করে তোলে ।

অ্যালোভেরা ; অ্যালোভেরা গাছের জেলটি শীতল প্রভাবের জন্য ভেতরের অংশটি খাওয়া যেতে পারে । অ্যালোভেরা জুস করে খাওয়া যেতে পারে । এছাড়া শসা এবং পুদিনা পাতার মতো অন্যান্য শীতল উপাদানের সাথে মিশিয়ে একটি সতেজ পানীয় তৈরি করে খাওয়া যায় ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top